লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা - লবঙ্গের ক্ষতিকর দিক জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা জানার জন্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন ।কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। আমি স্টেপ বাই স্টেপ লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা জানানোর চেষ্টা করব। আপনি যদি লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা ও লবঙ্গের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত আরো অনেক বিষয় জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের সদুত্তর পেয়ে যাবেন। তাই আর্টিকেলটি আপনি অনেক মনোযোগ এবং গুরুত্ব সহকারে পড়তে থাকুন।
লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা - লবঙ্গের ক্ষতিকর দিক জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলে শুধু লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা ও লবঙ্গের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কেই আলোচনা করা হয় নাই,এছাড়াও আরো অনেক পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যদি আপনি জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে পড়ুন। নিচের পয়েন্ট গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবেন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন

ভূমিকা

এই আর্টিকেলে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা, লবঙ্গের ক্ষতিকর দিক,লবঙ্গ কখন খাওয়া উচিত , প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া উচিত ,লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে কি হয় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি প্রতিটা পয়েন্ট বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। তাহলে আপনি অনায়াসে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। এবং লবঙ্গ সম্পর্কে যে বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন তা আপনি সহজেই জানতে পারবেন।

লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা

  • লবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা রয়েছে। কারো যদি অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করে তাহলে লবঙ্গের তেল দুই হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুলে লাগিয়ে কপালে আস্তে আস্তে মাসাস করলে এতে অনেক আরাম দেয়।
  • লবঙ্গ রক্তে শর্করার মাত্রা অনেক হারে কমিয়ে দিতে সাহায্য করে লবঙ্গের মধ্যে যে নাইজেরিসিন উপাদান রয়েছে তা অনেক কাজ করে।
  • অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করলে লবঙ্গ চায়ের সঙ্গে ভালোভাবে ফুটিয়ে পান করলে মাথা ব্যথা অনেকটা কমে যায়।
  • যদি কারো অনেক কাশি হয় তাহলে নিয়মিত কিছুদিন লবঙ্গ খেতে পারে এতে কাশি এবং শরীরের ব্যথা ভালো হয়ে যায়।
  • অতিরিক্ত দাঁত ব্যথা করলে অথবা মারি ফুলে গেলে এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে তিন চারটা লবঙ্গ ভালোভাবে ফুটিয়ে বারবার কুল কুচি করলে আস্তে আস্তে ব্যথা কমে যায়।
  • যদি মুখে অনেক দুর্গন্ধ হয় তাহলে আপনারা একটি লবঙ্গ সব সময় মুখের মধ্যে দিয়ে রাখুন কিছুদিন দিয়ে রাখলে দেখবেন আপনার মুখের গন্ধ অনেকটা ভালো হয়ে গেছে।

লবঙ্গের ক্ষতিকর দিক

লবঙ্গে যেমন অনেক উপকারিতা রয়েছে তেমন এর ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। লবঙ্গের উপকারিতা পাওয়ার জন্য বেশি করে লবঙ্গ খাওয়া একদমই ঠিক নয়। কারণ যে কোন জিনিস প্রয়োজন ছাড়া না খাওয়ায় ভালো। অনেকে কোন সমস্যা ছাড়াই লবঙ্গ খেয়ে থাকে এতে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। অনেকের লবঙ্গে এলার্জি রয়েছে, চিকিৎসকরা মনে করেন যাদের লবঙ্গে এলার্জি রয়েছে তাদের এই লবঙ্গ না খাওয়ায় ভালো। কারণ লবঙ্গ খাওয়ার ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যেমন মুখ ফুলে যেতে পারে, শরীরের জায়গা জায়গা খুলে যেতে পারে ,অথবা চুলকানি হতে পারে। তাই যাদের এলার্জি সমস্যা তাদের কে চিকিৎসকরা লবঙ্গ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন। যাদের রক্তের সমস্যা রয়েছে, যেমন অনেকের হিমোফিলিয়ার মত রক্তক্ষরণের সমস্যা থাকতে পারে, এদের জন্য লবঙ্গ খাওয়া একদম উচিত নয়। কারণ লবঙ্গে অনেকগুলো উপাদান রয়েছে, এর মধ্যে কিছু উপাদান রক্তকে পাতলা করে দেয়।যে সকল মানুষের এই সমস্যা রয়েছে, তাদের কোন জায়গায় কেটে গেলে সহজে রক্ত পড়া বন্ধ হয় না।

লবঙ্গ কখন খাওয়া উচিত

লবঙ্গ আপনারা যে কোন সময় খেতে পারেন, কারণ লবঙ্গে প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। কারণ লবঙ্গ মেটাবলিজমের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে লবঙ্গ খেতে পারলে মেটাবলিজমের মাত্রা বেড়ে যাবে। এই মেটাবলিজমের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে আপনাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। যেমন, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের মধ্যে আলসারের মতো বিভিন্ন সমস্যা গুলিকে ভালো করতে পারে।

যাদের কোন কিছু খেলে হজম হয় না অথবা হজম ক্ষমতা কম তারা নিয়মিত সকালে লবঙ্গ খাবেন। যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রাতে মাইগ্রেনের ব্যথার জন্য ঘুম আসে না তারা লবঙ্গের চা বানিয়ে পান করবেন।তাহলে দেখবেন আপনাদের মাথাব্যথা ভালো হয়ে যাবে এবং রাতে ভালোভাবে ঘুম হবে। আপনারা দিনের যেকোনো সময় এই লবঙ্গের চা টা বানিয়ে খেতে পারেন। কিন্তু যদি কোন সমস্যা না থাকে তাহলে খাবেন না, যদি দিনের যে কোন সময় মাথাব্যথা করে বা মাইগ্রেনের ব্যথা উঠে তখনই খাবে।

প্রতিদিন কয়টি লবঙ্গ খাওয়া উচিত

লবঙ্গ আমরা সচরাচর রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই এর বৈজ্ঞানিক নাম জানিনা এর বৈজ্ঞানিক নাম সিজিজিও মোরোমেটাম। লবঙ্গ একটি গাছের ফুলের কলিতে শুকিয়ে তৈরি হয়। লবঙ্গর মধ্যে যে সুগন্ধি রয়েছে এটার নাম ইউজেলন। ১০০ গ্রাম লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে ৬৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২৭৪ কিলো ক্যালরি শক্তি, ১৩ গ্রাম টোটাললিপিড, ৩৩ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার এবং ৬ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে।
এছাড়া লবঙ্গের তো রয়েছে, ভিটামিন ডি, ভিটামিন সি , ভিটামিন ই , ভিটামিন কে , ভিটামিন এ , ভিটামিন বি ৬ ইত্যাদি। তাই লবঙ্গে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং উপকারী উপাদান থাকার ফলে এটি অতিরিক্ত খাওয়া যাবেনা। কেউ যদি চিবিয়ে খায় তাহলে সারাদিনে ২ টা লবঙ্গ খেতে পারবে। অথবা কেউ যদি লবঙ্গের চা বানিয়ে খাই তাহলে সারাদিনে ৫ থেকে ৬ টা লবঙ্গ দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারবে।এতে শরীরের কোন ক্ষতি হবে না। যে কোন জিনিস উপকারিতা লাভ করার জন্য পরিমাণ মেন্টেন করে খাওয়া উচিত।

লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে কি হয়

অনেক আয়ুর্বেদরা ওষুধ তৈরি করতে লবঙ্গের ব্যবহার করে থাকে ।যেমন সর্দির ওষুধ, কাশির ওষুধ, শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা সমস্যা, ইত্যাদি এ সকল রোগের ওষুধ লবঙ্গ দিয়ে তৈরি করে থাকে। তাই অনেক কাল আগে থেকেই মানুষ লবঙ্গের ব্যবহার করে আসছে। যদি সকালে একটা লবঙ্গ বেটে রস করে অথবা চিবিয়ে খেলে সর্দি, কাশি , ঠান্ডা লাগা , শ্বাসকষ্ট , গলা ফোলা ইত্যাদি এ সকল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দিনে দুইটা করে লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়া যাবে সকালে একটা এবং রাতে একটা।
কেউ যদি সকালে খালি পেটে একটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারে তাহলে তার হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। অনেকের মাড়ি ফোলার সমস্যা রয়েছে এবং মুখে দুর্গন্ধ করে।তারা একটি লবঙ্গ মুখে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে একটু একটু করে চিবিয়ে প্রতিদিন সকালে এবং রাতে একটি করে খাবেন। তাহলে দেখবেন আপনাদের দাঁতের সমস্যা ভালো হয়ে গেছে। শুধু যে চিবিয়ে খেতে হবে সেটা কোন কথা নয়, আপনারা লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে না পারলে , একটা লবঙ্গ বেটে তার সঙ্গে তিন চার ফোঁটা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন এতেও উপকার পাবে।

শেষ কথা

এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা এরকম আরো অনেক নতুন নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url