উচ্চ রক্তচাপ কেন হয় - উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া উপায়
প্রিয় পাঠকউচ্চ রক্তচাপ কাকে বলে উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ ও কারণ তাৎক্ষণিক উচ্চ
রক্তচাপ কমানোর, উচ্চ রক্তচাপের খাবার ইত্যাদি বিষয়েস্টেপ বাই স্টেপ এই আর্টিকেল
মাধ্যমে আমি জানানোর চেষ্টা আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে চান
তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। আর্টিকেলটি পড়লে উচ্চ রক্তচাপ
সম্পর্কে ডিটেলস জানতে পারবেন ।
প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলে শুধুমাত্র উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কেই নয় এছাড়াও আরো অনেক
পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি আপনি যদি বিস্তারিতভাবে জানতে চান তাহলে প্রতিটি
পয়েন্ট খুব মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্র :উচ্চ রক্তচাপ কেন হয় উচ্চ রক্তচাপকমানোর ঘরোয়া উপায় জেনে নিন
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক আর্টিকেলের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ কাকে বলে,উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ ও
কারণ তাৎক্ষণিকভাবে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়,উচ্চ রক্তচাপ কাকে বলে,
উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া উপায়, ব্যায়াম ইত্যাদি সম্পর্কে স্টেপ বাই
স্টেপ আলোচনা করেছি।
উচ্চ রক্তচাপ কাকে বলে
হৃদপিণ্ডের ধমনীতে রক্তের চাপ অনেক বেশি থাকলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে বা একে হাই
প্রেসার বলে। এটাকে রেকর্ড করা হয় দুটি মনের মাধ্যমে ,যেটাতে কম
থাকে সেটাকে বলা হয় ডায়াস্টলিক, আর যেটাতে বেশি থাকে সেটা কে সিস্টোলিক।
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ ও কারণ
রক্তচাপ বৃদ্ধির কারণ
- রক্ত চাপ বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে মাত্রাতিরিক্ত লবণ খাওয়াই।
- অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে রক্ত চাপ বৃদ্ধি পায়।
- রাত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ (৬-৮ ঘন্টা)ঘুম না হওয়ার কারণে।
- শরীরে অতিরিক্ত চর্বি ও ওজন বেড়ে যাওয়ায়।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলমূল ও শাকসবজি না খাওয়ার।
- অতিরিক্ত নেশাদ্রব্য অর্থাৎ মদ পান করায়।
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ
উচ্চ রক্তচাপের আলাদাভাবে বিশেষ কোনো লক্ষণ পাওয়া যায় না। রক্তের চাপ
নিয়ন্ত্রণ আছে কি না সেটা পেশার মাপার যন্ত্র দ্বারা বুঝা যায় । পেশার মাপার
ক্ষেত্রে দুইটা জিনিস রেকর্ড করা হয়।সিস্টোলিকঃ দুটি সংখ্যার মধ্যে বড় সংখ্যা
কে বলা হয় সিস্টোলিক। সারা শরীরে রক্ত সঞ্চা লোনের সময় হৃদপিণ্ড থেকে স্পন্দনের
সময় যে চাপ মাপা হয়।ডাস্টলিকঃ দুই সংখ্যার দ্বিতীয় সংখ্যাটির নাম হল
ডায়াস্টোলিক। রক্তনালীর বাধা থেকে রক্ত সঞ্চালনের বিরুদ্ধে এই চাপের সৃষ্টি।
আরো পড়ুনঃ খেজুর খাওয়ার উপকারিতা - খেজুর খাওয়ার নিয়ম
স্বাভাবিকভাবে প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের প্রেসার ১২০/৮০ থেকে থাকে।( এখানে
সিস্টোলিক ১২০ আর ডায়াস্টলিক৮০) মানুষের রক্তের চাপ একে অপরের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন
হয়। সেই ক্ষেত্রে যদি কারো রক্তচাপ১০০/৬০ থেকে১২০/৮০ এরম মধ্যে থেকে থাকে ,
তাহলে ধরে নিতে হবে রক্তচাপ বা প্রেসার ঠিক আছে।
সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ বলা হয় যদি সব সময় ১৪০ / ৯০ বা এর চেয়ে বেশি থাকে
তাহলে সেটা উচ্চ রক্তচাপ। সেক্ষেত্রে চিকিৎসা নেওয়া দরকার।
তাৎক্ষনিক ভাবে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়
উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়
- হঠাৎ করে উচ্চ রক্তচাপ দেখা যায় সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয়
- তাৎক্ষণিকভাবে টক জাতীয় খাবার যেমন লেবু, তেতুল , আমড়া , চালতা ,ইত্যাদি খেতে হবে এতে উচ্চ রক্তচাপ আস্তে আস্তে স্বাভাবিকে আসবে।
- বাইরের খাবার অর্থাৎ ফাস্ট ফুড , তেলে ভাজাপোড়া ও বাইরের খাবারএড়িয়ে চলতে হবে হবে।
- পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকবে যথা টমেটো কিসমিস মিষ্টি আলু ,আলু বোখরা এগুলো যথারীতি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
- দিনের ৩-৪ লিটার পানি পানি পান করলেও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- চিনি ছাড়া লেবু চা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেরাখতে সহায়তা করে।
- মানসিক চাপ বা চিন্তা ভাবনা থেকে দূরে থাকতে হবে।
- লাল বিটের রস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
উচ্চ রক্তচাপ কমানোর খাবার
রক্তচাপ রোগের জন্য খাবারের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। যেকোনো চর্বি জাতীয়
খাবার এড়িয়ে চলতে হবে খাদ্য তালিকায় পটাশিয়াম জাতীয় খাদ্য বাড়াতে হবে।
বাড়ালে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সাধারণত ডাবের পানি , টমেটো, শসার সালাদ ,
বাদাম কালোজিরা , রসুন এ খাবারগুলো উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া উপায়
উচ্চরক্তচাপ কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়
- প্রতিদিন নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করুন
- পরিমিত খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন
- ক্ষুধা লাগলে খাবার খান আবার ক্ষুধা থাকতেই খাবারখাওয়া বন্ধ করুন
- দিনে কমপক্ষে চার-পাঁচ লিটার পানি পান করুন
- মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন
- ক্যাফেইন জাতীয় খাবার যতটা পারুল এড়িয়ে চলুন
- কাঁচা লবণ খাওয়া একেবারেই বন্ধ করুন
- শরীরের ওজনের ক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষ্য রাখুন
কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত
মানুষের শরীরে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রেসার ১২০/৮০। বয়সের সাথে সাথে প্রেশারও
কিছু টা বাড়তে পারে, বেড়ে উপরেরটা অর্থাৎ সিস্টোলিক ১৪০ থেকে যদি বেশি
অন্যদিকে নিচেরটা অর্থাৎডায়াস্টলিক৯০ থেকে বেশি হলে সেটা কে উচ্চ রক্তচাপ বলা
হয়ে থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ব্যায়াম
উচ্চ রক্ত কমানোর ক্ষেত্রে যে ব্যায়ামগুলো আপনি করতে পারেন প্রতিদিন নিয়মিত আধা
ঘন্টা হাটুন এতে আপনার শরীরের চর্বি কমে যাবে, যোগাসন , বেলি মারা , শ্বাস
প্রশ্বাস জোরে জোরে নেওয়া আবার ছাড়া, এছাড়া ও স্কোয়াট
বা প্ল্যাঙ্ক এর মত ব্যায়াম, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। নামাজ এমন একটি ব্যায়াম যা
শরীরের জন্য এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে।
অর্থাৎ শরীরে যে কোন রোগ জীবাণু প্রবেশ করা থেকে বাধা প্রদান করে। নামাযী ব্যক্তিকে আল্লাহতালা বড় বড় রোগ থেকে নিরাপদে রাখেন। অর্থাৎ নামাজী ব্যক্তিকে হাই প্রেসার, ডাইবেটিস , হার্টের রোগ , মেরুদন্ডের রোগ , পাকস্থলীর রোগ , লাঞ্চের রোগ , মস্তিষ্কের রোগ থেকে নিরাপদে রাখেন। (যদি সে সঠিকভাবে নামাজ আদায় করে)
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে লেবু
লেবুর মধ্যে অনেক গুণাগুণ রয়েছে এমন কিছু বিশেষ খনিজ পদার্থ রয়েছে যা
হাই প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে ।এর মধ্যে রয়েছে একটি
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা রক্তের চাপকে দমিয়ে রাখতে সহায়তা করে। লেবু বা লেবু
জাতীয় ফল অর্থাৎ বাতাবি লেবু ,কমলালেবু, মাল্টা ইত্যাদি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে
রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে রসুন
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে রসুন একটি অত্যন্ত উপকারী ঔষধ রসুনের মধ্যে এমন পদার্থ আছে
যার শরীরের মধ্যে গিয়ে রক্তকে তরল করে দেয়। এতে উচ্চ রক্তচাপ কমে যায় তাই
আমাদের প্রতিদিন নিয়মিত এক থেকে দুই কোয়া রসুন খাওয়া উচিত।
উচ্চ রক্তচাপে মধু
মধু এমন একটি ঔষধ, যেই ঔষধ টি দুনিয়াতে যত ধরনের, যত রোগ
রয়েছে সব রোগেরই মহা ঔষধ। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, উচ্চ রক্তচাপেও এই ওষুধটি
অত্যন্ত উপকারী। অতএব আমাদের প্রতিদিন সকালে দুই চা চামচ করে মধু খাওয়া উচিত।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনার জানতে পেরেছেন যে, উচ্চ রক্তচাপ
কাকে বলে, উচ্চ রক্তচাপের কারণ ও লক্ষণ উচ্চ রক্ত কমানোর ঘরোয়া উপায়। যদি আপনার
কাছে এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে যারা উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে জানে
না তাদের কাছে দয়া করে শেয়ার করে দিন। আর নতুন নতুন আর্টিকেল পেতেএই
ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।