মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় - মুখে মধু মাখার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক আপনি মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় জানার জন্য অনেক জায়গায়
খোঁজাখুঁজি করছেন।কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। আমি স্টেপ বাই স্টেপ মধু দিয়ে
ত্বক ফর্সা করার উপায় জানানোর চেষ্টা করব। আপনি যদি মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার
উপায় ও মুখে মধু মাখার উপকারিতা বিস্তারিত আরো অনেক বিষয় জানতে চান তাহলে
আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের সদুত্তর
পেয়ে যাবেন।
প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলে শুধু মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় এবং মুখে মধু
মাখার উপকারিতা সম্পর্কেই আলোচনা করা হয় নাই এছাড়াও আরো অনেক পয়েন্ট নিয়ে
আলোচনা করা হয়েছে যদি আপনি জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
সম্পূর্ণরূপে পড়ুন ।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় - মুখে মধু মাখার উপকারিতা
ভূমিকা
এই আর্টিকেলে মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় ,মুখে মধু মাখার উপকারিতা,মধু
দিয়ে রূপচর্চা,মুখে মধু ব্যবহারের নিয়ম , রাতে মুখে মধু মাখার নিয়ম
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি প্রতিটা পয়েন্ট বিস্তারিত ভাবে জানতে
চান তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত
পড়তে থাকুন। তাহলে আপনি অনায়াসে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়
আমরা জানি মধুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে, যা আমাদের শরীর ভালো রাখতে
সাহায্য করে। মধুতে যে ভিটামিন রয়েছে, তা আমাদের শরীরের সাথে সাথে ত্বকের জন্য
অনেক উপকারী। আপনি যদি ঠিকমতো ত্বকে মধু ব্যবহার করতে পারেন,তাহলে আপনার ত্বক ও
অনেক উজ্জ্বল এবং ফর্সা হবে। কারণ মধুতে কোন সাইড ইফেক্ট নেই, কোন ক্ষতিকারক
উপাদান নেই।
মধু যদি আপনি ঠিকঠাক ভাবে ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ত্বক অনেক ফর্সা হতে থাকবে।
আপনারা যেভাবে মধু দিয়ে ফর্সা হবেন, এখন আমি আপনাদের মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার
উপায় জানাবো। যেভাবে আপনারা মধু দিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বককে ফর্সা করতে পারেন
,আমি আপনাদের সাথে দুইটি প্যাক তৈরির পদ্ধতি ভালোভাবে জানানোর চেষ্টা করব।
১ নাম্বার প্যাক তৈরির নিয়ম
উপকরণঃ ১ চামচ মধু,পরিমাণ মতো কুসুম গরম পানি, ৩চামচ ছাগল অথবা গরুর দুধ,
১চামচ অলিভ অয়েল তেল, ২চামচঅ্যালোভেরা জেল এবং হাফ চামচের অর্ধেক জাফরান।
প্যাক তৈরিঃ সকল উপকরণ একসঙ্গে ভালোভাবে পেস্ট করে অথবা মিশিয়ে নিতে হবে
।এমন ভাবে মিশাতে হবে যেন, মিশ্রণটি ক্রিমের মত হয়ে যায়। মেশানোর পর ১০থেকে
১৫মিনিট ভালোভাবে ঢেকে রেস্টে রেখে দিন, ১৫ মিনিট পর মিশ্রণটি আপনার সমস্ত ত্বকে
এপ্লা করুন।আস্তে আস্তে ঘষে ঘষে এপ্লাই করুন, ভালোভাবে এপ্লাই করা হয়ে গেলে। ৩০
মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন, ৩০ মিনিট পর কুসুম গরম পানিতে দুই হাত হালকা করে
ভিজিয়ে আস্তে আস্তে ত্বকে মাসাজ করুন। এভাবে দুই মিনিট মাসাজ করার পর হালকা
কুসুম গরম পানি দিয়ে ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন ।
এভাবে আপনারা সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করবেন, দেখবেন আপনাদের ত্বক ভিতর থেকে
ফর্সা এবং উজ্জ্বল এবং কাচের মত চকচক করবে। এটা আপনারা ধৈর্য ধরে তিন মাস ব্যবহার
করে দেখুন অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবেন। ভালো কিছু পেতে হলে অবশ্যই ধৈর্য ধারণ করতে
হবে, আর নিয়মিত ব্যবহার করুন তাহলে আপনার ত্বক অনেক ফর্সা এবং উজ্জ্বল হতে
থাকবে। এটা আপনি হাত-পা গলা সব জায়গাতে ব্যবহার করতে পারবেন। এই প্যাকটি তৈরি
করে আপনারা নরমাল ফ্রিজে রেখে দুই দিন ব্যবহার করতে পারবেন।
২ নাম্বার প্যাক তৈরির নিয়ম
উপকরণঃ ১ চামচক চামচ মধু ,হাফ চামচ লেবুর রস ,হাফ চামচ গ্লিসারিন ,১ চামচ
এলোভেরা জেল।
প্যাক তৈরিঃ সকল উপকরণ একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে, ভালোভাবে
মেশানো হয়ে গেলে ত্বক পরিষ্কার করে ধুয়ে সমস্ত ত্বকে মিশ্রণটি লাগাতে হবে।
ভালোভাবে লাগানো হয়ে গেলে ৩০ মিনিটের জন্য প্যাকটি লাগিয়ে রাখতে হবে।ত্বকে এটি
হালকা শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে
ব্যবহার করলে আপনাদের ত্বক সব সময় মশ্চারাইজার থাকবে।
রুক্ষ ভাব দেখা দিবেনা, এবং ত্বক নরম এবং উজ্জ্বল হবে। মিশ্রণটি আপনারা ইচ্ছা
করলে প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন ,একদিন তৈরি করে তিন থেকে চার দিন নরমাল ফ্রিজে
রেখে ব্যবহার করতে পারবেন। প্যাকটি আপনারা দিনে দুইবার করে ব্যবহার করলে বেশি
উপকৃত হবেন, তাই এটি ব্যবহার করে দেখুন তাহলে অবশ্যই আপনার ত্বক আগের চেয়ে অনেক
সুন্দর হবে।
মুখে মধু মাখার উপকারিতা
আমরা অনেকেই জানি যে মধুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে। এমন কোন ভিটামিন নেই যে
মধুর মধ্যে বিদ্যমান নেই। সকল ধরনের ভিটামিন ও উপকারী উপাদান এই মধুর মধ্যে
রয়েছে। যা আমাদের শরীরের পাশাপাশি মুখের জন্য মধু ভীষণ উপকারী। মধুতে রয়েছে
ব্যাকটেরিয়ারোধী ,এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিসেপটিক এই সকল বিভিন্ন উপাদান
আমাদের ত্বকের ব্রণ রিমুভ করতে অথবা দূর করতে অনেক সাহায্য করে।
মধু আমাদের ত্বকের লোমকূপ উন্মুক্ত করে এবং ত্বকের ভেতরে যে ব্ল্যাকহেড থাকে মধু
ব্যবহারে তা দূর হয়ে যায়। এবং সারাদিন আমাদের ত্বকে আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য
করে, মধুর মধ্যে যে সকল উপাদানগুলো রয়েছে ,এ সকল উপাদান যাদের ত্বক শুষ্ক এবং
যাদের ত্বক তৈলাক্ত এই দুটি ত্বকের জন্য মধু অনেক উপকারী উপাদান।মধু কেউ যদি
নিয়মিত খাই তার ত্বকে বয়সের কোন ছাপ পড়বে না।
তাই প্রতিটা মেয়ের প্রতিদিন কমপক্ষে 2 চামচ মধু খাওয়া প্রয়োজন। নিয়মিত
প্রতিদিন মধু খেলে চামড়া জড়ো হবে না, চোখের নিচে যে কালো দাগ হয় তা আস্তে
আস্তে কমে যাবে। শরীল দুর্বল হলে এ সকল সমস্যা বেশি দেখা যায়। নিয়মিত মধু খেলে
শরীরের দুর্বলতা কাটে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন মধু দিয়ে
প্যাক বানিয়ে আপনারা ত্বকে ব্যবহার করবেন,এতে আপনাদের ত্বক অনেক সুন্দর থাকবে
এবং তার পাশাপাশি প্রতিদিন দুই চামচ করে মধু খাবেন।
মধু দিয়ে রূপচর্চা
মধু একটি প্রাকৃতিক উপাদান, মধু দিয়ে রূপচর্চা এটি অনেক কাল আগ থেকেই চলে আসছে।
কারণ মানুষ জানে মধুতে যে উপাদান গুলো রয়েছে, তা কোন ক্ষতিকর উপাদান নয় এটা
আমাদের শরীর এবং ত্বক দুটোর জন্যই অনেক উপকারী। মধু দিয়ে আমরা বিভিন্নভাবে প্যাক
তৈরি করে ব্যবহার করতে পারি।এতে আমাদের ত্বক প্রাকৃতিক ভাবে ভালো হয়ে উঠবে কারণ
প্রতিটা মেয়ে বা ছেলে সবাই চাই তার ত্বক যেন অনেক সুন্দর, উজ্জ্বল এবং কাচের মত
স্বচ্ছ দেখা যায়। আপনারা মধু দিয়ে যেভাবে রূপচর্চা করবেন।
মধু দিয়ে রূপচর্চা যেভাবে করবেন
প্যাক তৈরিঃ ২ চামচ বেসন, এক চামচ মধু, চার চামচ দুধ, হাফ চামচ জাফরান, এক চামচ গোলাপ জল এর সকল উপকরণ একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে প্যাকটি কিছুক্ষণের জন্য রেস্টে রেখে দিন। তারপর আপনার ত্বকটি ভালোভাবে ক্লিন করে নিন, ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার হয়ে গেলে, যে প্যাকটি তৈরি করেছেন সেটি আপনার ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এরপর 15 মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন 15 মিনিট পর হালকা শুকিয়ে গেলে হালকা মাসাজ করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে আপনারা সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন, এভাবে ব্যবহার করলে আপনাদের ত্বক ভিতর থেকে মশ্চারাইজার করবে এবং দাগ দূর হতে সাহায্য করবে।
মুখে মধু ব্যবহারের নিয়ম
আপনারা খুব সহজে যেভাবে মুখে মধু ব্যবহার করতে পারেন। এক চামচ এলোভেরা জেল এবং এক
চামচ মধু হাতের তালুর ওপর নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি ভালোভাবে
মুখে লাগিয়ে নিন, লাগানো হয়ে গেলে ১০ থেকে ১২ মিনিট শুকিয়ে নিন। যখন হালকা
শুকিয়ে যাবে চামড়া একটু টান ধরবে তখন হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এটি আপনারা প্রতিদিন দুইবার করে ব্যবহার করতে পারবেন।
কারণ এটি মশ্চারাইজারের কাজ করে, শীতকালে এই প্যাকটি ব্যবহার করলে বেশি ভালো হয়।
কারণ শীতের সময় ত্বক অনেক শুষ্ক হয়ে যায় ত্বকে মশ্চারাইজার কমে যায়। তাই এই
প্যাকটি ব্যবহার করলে আপনাদের ত্বকে মশ্চারাইজার ব্যবহার করা লাগবে না।এপর
ভালোভাবে মুখ মুছে নিন, এরপর হাতে সামান্য গোলাপজল নিয়ে মুখে এপ্লাই করে নিন।
এভাবে আপনি ব্যবহার করলে আপনার ত্বক অনেক নরম এবং সফট ও চামড়া জড়ো হবে না।
রাতে মুখে মধু মাখার নিয়ম
আমরা সারাদিন কোন না কোন কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকি।এবং আমাদের বিভিন্ন কাজের জন্য
আমাদের ত্বকে অনেক ধুলাবালি ও নোংরা লেগে যায়। কারণ সারাদিন আমরা কাজে থাকাই মুখ
পরিষ্কার করার সময় পায়না এর ফলে আমাদের ত্বকে অনেক ধুলাবালি জমতে থাকে। তাই
আমাদের প্রতিদিন সারা দিনের কাজ শেষ করে রাতে ঘুমাতে যাবার আগে মুখের একটু যত্ন
নেওয়া উচিত।
না হলে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন কালো দাগ, ব্রনের
সমস্যা,ব্ল্যাকহেড, এলার্জি ইত্যাদি এতে আমাদের ত্বক অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ত্বকের
সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। কারণ প্রতিটা মানুষ চায় তার সৌন্দর্য যেন বৃদ্ধি পায়।
তাই সারাদিন ত্বকের যত্ন না নিতে পারলেও রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের যত্ন করা
অবশ্যক।তাই আপনারা মধু দিয়ে খুব সহজে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন, আপনারা যেভাবে মধু
দিয়ে ত্বকের যত্ন নিবেন।
রাতে মুখে মধু মাখার নিয়ম জেনে নিন
প্যাক তৈরিঃ এক চামচ মধু ,এক চামচ লেবুর রস, এক চামচ কফি পাউডার,এবং হাফ
চামচ চিনি একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে ত্বকে
ম্যাসাজ করে ব্যবহার করুন। এভাবে 5 মিনিট মাসাজ করতে থাকুন ৫ মিনিট পর ত্বকে আবার
৫ মিনিটের জন্য শুকিয়ে নিন। ৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে
ধুয়ে ফেলুন। এভাবে আপনারা সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করতে পারবেন। এতে আপনাদের ত্বক
ভিতর থেকে পরিষ্কার হবে ভিতরে যে সকল ময়লা এবং জীবাণু জমে যায় তা বের হয়ে যাবে
এবং সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
শেষ কথা
এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই
ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় এরকম আরো অনেক
নতুন নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের
সাথে শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।