দই এর উপকারিতা - দুধ থেকে দই তৈরির পদ্ধতি

 

প্রিয় পাঠক, আপনি দই এর উপকারিতা জানার জন্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন ।কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। আমি স্টেপ বাই স্টেপ দই এর উপকারিতা জানানোর চেষ্টা করব। আপনি যদি দই এর উপকারিতা ও দুধ থেকে দই তৈরির পদ্ধতি  বিস্তারিত আরো অনেক বিষয় জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি  শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের  সদুত্তর পেয়ে যাবেন।

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটির মধ্যে দইয়ের বিস্তারিত অনেক কিছু আলোচনা করা হয়েছে। যা আপনারা নিচের পয়েন্ট গুলো মনোযোগ সহকারে করলে জানতে পারবেন। তাই দয়া করে আর্টিকেলটি গুরুত্ব সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ দই এর উপকারিতা - দুধ থেকে দই তৈরির পদ্ধতি 

ভূমিকা

আমরা সবাই দই খেয়ে থাকি ,কিন্তু দইয়ের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছুই জানিনা।দই আমাদের আরো অনেক কাজে ব্যবহার করতে পারি। যেমন,টক দই দিয়ে ফর্সা হবার উপায়, টক দই খেয়ে কিভাবে ওজন কমে ইত্যাদি আরও অনেক বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই আপনারা আর্টিকেলটি গুরুত্ব সহকারে সম্পূর্ণ করতে থাকুন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

দই এর উপকারিতা

দই একটি সুস্বাদু খাবার, দই আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য অনেক উপকারী। রোজ খাদ্য তালিকায় নিয়মিত দই রাখা শরীরের জন্য অনেক ভালো। দই হজম শক্তি বাড়াতে অনেক সাহায্য করে। যদি কারো হজমে সমস্যা থাকে তাহলে নিয়মিত দই খেলে সে সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে।দইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম এই দুটি উপাদান আমাদের শরীরে হাড়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
দয়ে অনেক উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে‌। এ সকল ব্যাকটেরিয়া গুলো আমাদের শরীরে কোন ক্ষতি করে না, এবং আমাদের হজম শক্তিতে সাহায্য করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দইয়ের এই ব্যাকটেরিয়া অনেক কাজ করে। তাই যাদের হজম শক্তি কম তারা নিয়মিত এই দই খেতে পারেন। দয়ে যে পটাশিয়াম রয়েছে তা আমাদের রক্তচাপ কমাতে অনেক সাহায্য করে থাকে।

টক দই এর উপকারিতা

প্রতিটা মানুষেরই স্বাস্থ্যর দিকে খেয়াল রাখা উচিত। শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়ম-কানুন মেনে চলা উচিত।ঠিক মত খাবার খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আর আমরা যে সকল উপকারী খাদ্য খেয়ে থাকি তার মধ্যে একটি খাদ্য হলো টক দই। আমিষ, ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদি অনেক উপকারী উপাদান এই টক দইয়ের মধ্যে রয়েছে।

নিয়মিত টক দই খেলে শরীরে অনেক রকম উপকারিতা লাভ করা যায়। টক দইয়ে উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। টক দই এ প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন থাকার ফলে দাঁত ও হার মজবুত করতে অনেক সাহায্য করে। যারা দুধ খেতে পারেন না দুধের পরিবর্তে টক দই খেতে পারেন।

টক দই এ যে উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে,তা আমাদের শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মেরে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। এবং আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। টক দই এ থাকা ল্যাকটিক এসিড যা ডায়রিয়া কমাতে অনেক উপকারে। টক দই খেলে শরীরে কোন বিষাক্ত পদার্থ জমতে দেয় না।

ওজন কমাতে টক দই এর উপকারিতা

ওজন কমানোর জন্য টক দই একটি উপকারী খাবার। ওজন কমানোর পাশাপাশি টক দই এর উপকারিতা অনেক। টক দই এ রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি অনেক পুষ্টিগুণ। এ সকল পুষ্টিগুণ গুলো আমাদের ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে। টক দই ৬১% ফ্যাট বার্ন করে থাকে এবং ২২% সামগ্রিক ওজন কমিয়ে থাকে।

টক দই নিয়মিত দুই বেলা করে খেতে পারলে শরীরের যে সকল বাড়তি চর্বি রয়েছে তা অনায়াসে কেটে যায়। যেকোনো ডায়েট করতে হলে, প্রথমে মিষ্টি খাবার বাদ দিতে বলে।কিন্তু টক দইয়ে কোন মিষ্টি থাকে না এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিষ্টি খাবার খাওয়া নিষেধ, সেক্ষেত্রে তারা মিষ্টি দই খেতে পারে না। তারা অনায়াসে টক দই খেতে পারে।তাদের শরীরের জন্য টক দই অনেক উপকারীর হয়ে থাকে। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।

মুখে টক দই এর উপকারিতা

মুখের টক দই ব্যবহার করলে আমাদের ত্বকের অনেক উপকার হয়ে থাকে।টক দই ব্যবহারে আমাদের ত্বক অনেক ফর্সা ও নরম হয়।এবং টক দই ব্যবহারে ত্বকের কালো দাগ আস্তে আস্তে ভালো হয়ে যায়। টক দইয়ে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া ত্বকের ভিতর থেকে ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। যা ত্বকে ব্রণ হওয়া থেকে দূরে রাখে।
মুখে টক দই যেভাবে ব্যবহার করতে হবে, তিন চামচ টক দই, হাফ চামচ জাফরান, হাফ চামচ মধু ও এক চামচ আতপ চালের গুড়া একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে সমস্ত মুখে এপ্লাই করতে হবে ।15 মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করতে করে নিতে হবে।এতে ত্বক ফর্সা এবং ব্রণ ভালো হতে সাহায্য করবে।

দুধ থেকে দই তৈরির পদ্ধতি

দুধ দে থেকে খুব সহজে দই তৈরি করা যায়। আমরা যেভাবে দুধ থেকে দই তৈরি করি, এক কেজি দুধ ভালো ভাবে ফুটিয়ে আধা কেজি করতে হবে ,এতে দই এর টেস্ট ভালো হবে। এরপর টেস্ট অনুযায়ী চিনি মিশিয়ে নিতে হবে, এবং চুলা বন্ধ করে দিয়ে দুধে যখন আঙ্গুল দিতে পারবেন, এমন গরম থাকা অবস্থায় হাফ কাপ টক দই ভালোভাবে ফেটিয়ে দুধের মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করে নিন।

এরপর যে পাত্রে দই বসাবেন সেই পাত্রে মিশ্রণটি ঢেলে নিন, ওপরে ফয়েল পেপার অথবা ঢাকনা দিয়ে ভালো করে মুখ আটকিয়ে নিন,তোয়ালে অথবা যেকোনো গরম কাপড় পেচিয়ে 10-15 ঘন্টার জন্য রেখে দিন।যেখানে গরম বেশি সেই স্থানে রাখলে দই তাড়াতাড়ি বসে যায়।আবার জাল দিয়েও দই তৈরি করতে পারেন।

চুলায় জাল দিয়ে যেভাবে দই তৈরি করবেন, তিন গ্লাস পানি ভালোভাবে ফুটিয়ে তার মধ্যে একটি স্ট্যান্ড বসিয়ে দিন ,এরপর দইয়ের পাত্রটি স্টানের উপর বসিয়ে দিন এবং ভালোভাবে চাপা দিয়ে ঢেকে দিন ৩০ মিনিট হালকা আছে জাল দিন। ৩০ মিনিট পর একটা কাঠি দিয়ে পরীক্ষা করুন যদি না হয়, তাহলে চুলা বন্ধ করে ওইভাবেই ঢেকে রাখুন তাহলে দেখবেন অনেক সুন্দর ভাবে দই বসে গেছে।

টক দই দিয়ে চুলের যত্ন

টক দই যেমন আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী এবং টক দইয়ে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। যা আমাদের চুলের যত্নেও অনেক উপযোগী একটি উপাদান। আমরা চুলের যত্নে যেভাবে টক দই ব্যবহার করতে পারি তা জেনে নিন।এক কাপ টক দই এবং তিনটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর।
ভেতরের তেল বের করে টক দইয়ের মধ্যে ভালোভাবে মিশিয়ে সমস্ত চুলে এপ্লাই করতে হবে।এভাবে ২৫-৩০ মিনিট রাখার পর চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে চুলের গোড়া অনেক মজবুত হবে, চুলের গোড়ার খুকশী দূর হবে,এবং চুলের গোরার রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করবে। চুলের গোড়ায় যত বেশি রক্ত চলাচল করবে তত চুল ভালো থাকবে এবং চুল ওঠা বন্ধ হবে।

মন্তব্য

এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। এরকম আরো অনেক নতুন নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url