গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি ভালোভাবে জেনে নিন

প্রিয় পাঠক গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি আপনি জানার জন্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন কিন্তু কোথাও সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না। আমি আপনাকে স্টেপ বাই স্টেপ গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি জানানোর চেষ্টা করব। যদি আপনি গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি ও গোসল কখন ফরজ হয় তা জানতে চান। তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন ।আশা করি আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি ভালোভাবে জেনে নিন

প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলে গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি ও গোসল কখন ফরজ হয় এ নিয়েই শুধু আলোচনা করা হয় নাই এছাড়াও আরো অনেক পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ।যদি আপনি সেই পয়েন্টগুলো বিস্তারিত ভাবে জানতে চান ।তাহলে আর্টিকেলটি খুব গুরুত্ব ও মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি ভালোভাবে জেনে নিন

ভূমিকা

ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে পাক পবিত্র হওয়া । আর বড় অপবিত্রতা থেকে পাক হতে হলে গোসল করা আবশ্যকীয় । অথচ আমাদের সমাজে কয়জন আমরা জানি যে যে, গোসল কখন ফরজ হয় , গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি , গোসলের সুন্নত কি কি , গোসল কখন সুন্নত হয় জানাযার ফরজ কয়টি ও কি কি , প্রচন্ড শীতে ফরজ গোসলের প্রয়োজন পড়লে কি কোন ছাড় রয়েছে এ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে।

গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি

গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি আসুন জেনে নেওয়া যাক ।মুসলমানের এবাদত কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত পবিত্রতা অর্জন করা। আর বড় নাপাকি অর্থাৎ বড় অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন করতে হলে গোসল করা ফরজ বা আবশ্যকীয়। এই ফরজ গোসল আদায় করার জন্য গোসলের আবার কয়েকটি ফরজ রয়েছে সেই ফরজগুলো কি কি যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে নিম্নে গোসলের ফরজ গুলো দেওয়া হলো আপনি ভালো ভাবে জেনে নিন।
গোসলের ফরজ তিনটি
  1. ভালোভাবে কুলি করা অর্থাৎ ( রোজা না থাকলে গড়গড়ার সহিত কুলি করা)
  2. নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌছানো
  3. সমস্ত শরীর উত্তমরূপে ধৌত করা ।(যাতে করে শরীরের কোন অংশ শুকনো না থাকে )

গোসল কখন ফরজ হয়

আমরা যে ফরজ গোসল করে থাকি ।সে ফরজ গোসল কখন হয়? আসুন তা জেনে নেওয়া যাক।
  1. স্ত্রী সহবাসের দ্বারা স্বামী স্ত্রী উভয়ের প্রতি গোসল ফরজ হয়।
  2. স্বপ্নদোষ হওয়ার দ্বারা গোসল করা ফরজ ।
  3. নারীদের হায়েজ ঋতুস্রাব থেকে পবিত্রতা হওয়ার পরে গোসল করা ফরজ ।
  4. নারীদের নেফাস অর্থাৎ বাচ্চা প্রসবের পর রক্তপাত বন্ধ হলে গোসল করা ফরজ
  5. কোন মুসলমান যদি মুসলমান হয় তার ওপর গোসল করা ফরজ ফরজ
প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ওউত্তর
এখন প্রশ্ন আসতে পারে স্বামী-স্ত্রী যদি না হয়ে পর পুরুষ বা পর মহিলা যদি একে অপরের সাথে মিলিত হয় তাহলে কি গোসল ফরজ হবে না?
উত্তরঃ গোসল তো অবশ্যই ফরজ হবেই ।সাথে সাথে যেনা করা কবিরা গুনাহ। সে গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।


প্রশ্নঃ যদি কোন পুরুষ বা মহিলার স্বপ্নদোষ হয় কিন্তু বীর্যপাত না হয় তাহলে কি তার উপরে গোসল ফরজ হবে?
উত্তরঃ যদি সে ঘুম থেকে উঠে দেখে যে তার লুঙ্গি বা কাপড়ে বীর্যের কোন চিহ্ন বা ভেজা নেই ।মোটকথা সব মিলিয়ে সে বুঝতে পারছে যে তার বীর্যপাত হয় নাই তাহলে তার উপর গোসল করা ফরজ নয়।

প্রশ্নঃ নারীদের হায়েজ ঋতুস্রাবের সর্বনিম্ন সময়সীমা কত দিন আর সর্বোচ্চ সময়সীমা কতদিন?
উত্তরঃ নারীদের হায়েজের সময়সীমা নিম্নে ৩ দিন ৩ রাত ।ঊর্ধ্বে ১০ দিন ১০ রাত। যদি ৩ দিন এর চেয়ে কম অথবা ১০ দিন এর বেশি হয় তাহলে বুঝে নিতে হবে যে ,সে অসুস্থ ।তার অন্য কারণে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

প্রশ্নঃনারীদের নেফাজ অর্থাৎ বাচ্চা প্রসব হওয়ার পর কত দিনের মধ্যে গোসল করা ফরজ
উত্তরঃ নারীদের নেফাজ অর্থাৎ বাচ্চা প্রসব হওয়ার পর ৪০ দিনের আগে আগে যেকোনো সময় যদি তার রক্ত বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তার ওপর তাৎক্ষণিক গোসল করা ফরজ। আর যদি ৪০ দিন পার হয়ে যায় অথচ এখনো রক্ত বন্ধ না হয় তাহলে তার চিকিৎসা করানো আবশ্যকীয়। এটা নেফাজ নয় অন্য কোন কারণে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

ফরজ গোসলের বৈজ্ঞানিক উপকারিতা

ফরজ গোসলের বৈজ্ঞানিক উপকারিতা। যে সমস্ত কারণে গোসল ফরজ হয় সেগুলো উপরে আলোচনা করা হয়েছে । এখন গোসল ফরজ হওয়ার পরে গোসল করা আল্লাহতালার পক্ষ থেকে নির্দেশ। কিন্তু এখন জানার বিষয় যে এর মধ্যে বৈজ্ঞানিক কি কোন উপকারিতা রয়েছে ।
অবশ্যই এর মধ্যে বৈজ্ঞানিক বড় বড় উপকারিতা রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে যখনই মানুষের গোসল ফরজ হয় তখন তার শরীরের মধ্যে একটা অলসতা ভাব ,বিষন্নতা ভাব , ক্লান্ত ভাব সৃষ্টি হয়। যখন মানুষ গোসল করে নেয় ,সাথে সাথে অলসতা ভাব , বিষন্নতা ভাব , ক্লান্তিবোধ ভাব দূর হয়ে যায় ।

গোসলের সুন্নত

গোসলের সুন্নত পাঁচটি তার নিম্নরূপ
  1. গোসলের আগে পবিত্রতা অর্জনের নিয়ত করা
  2. গোসলের আগে বিসমিল্লাহ বলে গোসল শুরু করা
  3. শরীরের নাপাকিস্তান ধুয়ে ফেলা
  4. ভালোভাবে ওযু করা
  5. সমস্ত শরীর তিন তিনবার ধৌত করা

গোসল কখন সুন্নত হয়

গোসল কখন সুন্নত হয় আসুন তা জেনে নেওয়া যাক
চারটি কারণে গোসল সুন্নত হয়
  1. জুমার নামাজ আদায় প্রাক্কালে গোসল করা সুন্নত
  2. ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাজের প্রাক্কালে গোসল করা সুন্নত
  3. এহরাম বাঁধার আগে গোসল করার সুন্নত
  4. সমস্ত হাজীদের আরাফায় অবস্থানকালে অবস্থানের সময় গোসল করার সুন্নত ।

জানাযার ফরজ কয়টি ও কি কি

জানাজার ফরজ কয়টি ও কি কি ।কোন মুসলমান ব্যক্তি মারা গেলে তার শেষ যে ,নামাজ পড়া হয় সেই নামাজকে জানাজার নামাজ বলে। সেই জানাজার নামাজের কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে । কয়েকটি ফরজ রয়েছে ।কয়েকটি সুন্নত রয়েছে তাহলে আসুন জানা যাক জানাজার নামাজের ফরজ গুলো কি কি
  1. জানাজার নামাজে ৪টি তাকবীর দেওয়া
  2. দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া ওজর ব্যতীত বসে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।

প্রচন্ড শীতে ফরজ গোসলের প্রয়োজন পড়লে কি কোন ছাড় রয়েছে?

উত্তরঃ প্রচন্ড শীতে ফরজ গোসলের প্রয়োজন পড়লে ছাড় অবশ্যই রয়েছে ।সেটা অজরবশত হতে হবে ।অর্থাৎ যদি আপনার ঠান্ডা পানিতে গোসলের কারণ অসুস্হয়ে পড়েন অথবা আপনার ঠান্ডা জনিত জ সমস্যা রয়েছে যেটার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে । বা এমন ঠান্ডা যা মারা যাওয়ার ভয় রয়েছে, মোটকথা ওজোর থাকলে থাকলে থাকলে শরীয়ত এর পরিবর্তে তাইয়াম্মুম করার হুকুম দিয়েছে ।

শেষ কথা

এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পেরেছেন যে , গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি, গোসল কখন ফরজ হয় , গোসলের সুন্নত ইত্যাদি। যদি আপনার কাছে আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে যারা গোসল বিষয় সম্পর্কে জানেনা তাদের কাছে শেয়ার করুন ।আর নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url